বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারী মানেই ঘরকন্যার দেখা শোনা করবে। চার দেয়ালের ভিতরে থেকে স্বামী সন্তানের দেখা শোনা করবে। কিন্তু জাতীয় কবি নজরুল তো বলেছেন, অর্ধেক কাজ করিয়াছে নারী। তাহলে সারা বিশ্বেই যখন নারীরা অনেক এগিয়ে গেছে, রেখেছে তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর, সেখানে আমাদের দেশের নারীরা কেন পিছিয়ে থাকবেন?
অনেক নারীই উঠে এসেছেন তাদের কাজের মাধ্যমে। কেও গায়িকা, কেও নায়িকা। আবার কেও অভিনেত্রি। অনেকেই নিয়েছেন ব্যবসার মত কঠিন চ্যালেঞ্জ। তাদের অনেকেই দেখেছেন সাফল্য। অনেকেই আবার সাফল্যের চূড়ান্ত শিখরে আরোহণ করেছেন। অনেকেই আবার এগিয়ে যাচ্ছেন দুর্দান্ত গতিতে। এরকমই একজন নারী তাবাসসুম রহমান।
স্নাতক পাশ করার পরেই বিয়ে করে যখন ঘরের ভিতরে বসে ছিলেন, তিনি একে দেখেছেন সময় অপচয় হিসাবে। কিছু একটা করা দরকার। বেশ কিছু জিনিসের পরকল্পনা করেছিলেন।
অনলাইন কুরিয়ার সার্ভিস “কুইকার বিডি” প্রতিষ্ঠা করেন এ নারী উদ্যোক্তা। ২০১৫ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন এ সার্ভিস। প্রথমে খুব ছোট পরিসরে কাজ শুরু করলেও এক বছরে তা বিস্তৃতি লাভ করেছে অনেকাংশে। বর্তমানে চট্টগ্রাম ও বরিশালে রয়েছে তাদের শাখা অফিস। তার ব্যবসায়িক সাফল্যের মূলমন্ত্র হিসাবে তিনি বেছে নিয়েছেন কাস্টমার স্যাটিসফ্যাকশন। তাছাড়া আরা ক্রেতদের দিয়ে থাকেন বিভিন্ন অফার ও মূল্যছাড়। শুরুটা হয়েছিলো মাত্র একজন ডেলিভারি ম্যান দিয়ে। তাবাসসুম দেখাশোনা করতেন একাউন্টস ও কাস্টমার কেয়ার। এখন ১২ জন ডেলিভারি ম্যান এবং ২ জন পিকা আপ ম্যান এবং ১ জন কাস্টমার কেয়ার কর্মরত রয়েছেন এখানে। পঞ্চাশ হাজার টাকা মূলধন দিয়ে তিনি শুরু করেন এ যাত্রা।
বর্তমানে তিনি নিজেকে অত্যন্ত ব্যস্ত রেখেছেন এ কাজে। সাফল্যের চূড়ান্ত শিখরে ওঠার নেশা তাকে এমনভাবে পেয়ে বসেছে, যাতে অবসরের কোন চিন্তাই তিনি এখন করতে পারেন না। সফল নারী উদ্যোক্তা ইফফাত ই ফারিয়া বলেন, যদি এরকম নেশা সকল নারীদের পেয়ে বসে, তাহলে আমাদের দেশটা পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর তালিকায় উপরের দিকে থাকবে।
স্বামী ওয়াহিদ মুরাদ তাকে একাজে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেন। সন্তানদের সুন্দরভবাবে লালন পালন করে তিনি যেভাবে তিনি ব্যবসায় নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তা অন্য আট-দশজন নারীদের কাছে রীতিমত ইর্শনীয় ব্যাপার।